প্রথমেই বলে নেই আমি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি আমার আরেকটি পরিচয় আছে সেটি হলো আমি একজন অনলাইনার। ২০১১ সাল থেকে অদ্যবধি অনলাইন এবং তথ্য প্রযুক্তির সাথে জড়িত। কম্পিউটারের হাতে খড়ি তারও অনেক আগে। আমার সহকর্মী শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্খীরা প্রায়ই আমার কাছে জিজ্ঞেস করে থাকেন নিজস্ব পেশার বাইরে গিয়ে অনলাইনে কিভাবে আয় করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়। একজন অনলাইনার হিসেবে আমি একাধারে একজন ব্লগার (তথাকথিত বিতর্কিত কোন মানুষ নই, তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে লেখালেখি করি), একজন ইউটিউবার ও সর্বোপরি একজন ওয়েব ডিজাইনার এন্ড ডেভেলপার। নিজের যেহেতু একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইট রয়েছে তাই এসইও(সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) টা মুটামুটি বুঝি। কথা দিয়েছিলাম আমি আপনাদের ইউটিউবিং শেখাব। এবং এই কাজের মাধ্যমে কিভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদী আয় এর উপায় বের করা যায় সে সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো। আমি নিশ্চিত শিক্ষকতার পাশাপাশি আপনি যদি সুস্থভাবে অর্থাৎ বৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে ইউটিউবে আপনার জন্য আদর্শ একটি মাধ্যম হতে পারে। তবে অনলাইনে ঢুকলাম আর অর্থ ইনকাম করা শুরু করলাম এমনটি ভেবে যদি কেউ আমার কাছে ইউটিউবিং শিখতে আসেন তো আমি বলব আপনি ১০০ হাত দূরে থাকুন। কারণ ইউটিউব যখন আমি শুরু করলাম, তখন থেক প্রথম তিন বছর আমার এখান থেকে আয় হয়েছিল মাত্র ১০ ডলার। কারন তখন আমি এই লাইনে কোন হেল্প পাওয়ার মতো কাউকে পাইনি। তবে আমি আপনাদের এইটুকু বলতে পারি আপনার/আপনাদের এত সময় লাগবে না। কারন এই বিষয়ে সার্বক্ষণিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আমি সবসময় আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের ইতিবাচক সাড়া পেলে আপনাদর শেখানোর কাজটা চালিয়ে যাব।
প্রশ্ন: আমি কী ইউটিউবার হতে পারব?
উত্তর: কেন নয়? কারন ইউটিউবার হতে হলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে, এই কথাটা মনে হয় ঠিক নয়। এর জন্য সব চেয়ে যেটা বেশি জরুরি, তা হলো অনলাইনে একটু নিয়মিত হওয়া। মনোবল না হারিয়ে দৃঢ় বা সিদ্ধান্তে অবিচল থেকে চেষ্টা করা। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে একজন ব্যক্তিকে তিনজন লোক মিলে একটি পানির চৌবাচ্চা তে মাথা চুবিয়ে ধরে রাখল, মৃতপ্রায় ব্যক্তিটি বাঁচার আকুতি নিয়ে একসময় চৌবাচ্চা থেকে মাথা ঠেলে উপরে উঠিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলো এবং সফল হল। তখন সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হলো যখন তোমাকে পানিতে চুবিয়ে রাখা হলো তখন তোমার অনুভূতিটা কেমন ছিল। তখন ঐ ব্যক্তি উত্তর দিল, আমার ভেতরে প্রচণ্ডভাবে বেঁচে থাকার আকাঙ্খা প্রবল হয়ে উঠেছিল। একবার ভাবুন তো বেঁচে থাকার আকাঙ্খা যদি একজন মানুষকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে। তবে সফল হবার আকাঙ্খা মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে?
প্রশ্ন: ইউটিউব একাউন্ট করতে বা চ্যানেল খুলতে কি কি লাগে?
উত্তর: আপনি যদি মনে মনে ভেবেই থাকেন এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে থাকেন যে, আপনি ইউটিউবে সফল হতে চান। এবং সেই লক্ষ্যে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান তবে প্রথমত আপনার তেমন কিছুই লাগবেনা। শুধুমাত্র একটি নতুন জিমেইল একাউন্ট খুলতে হবে। ইয়াহু কিংবা হটমেইল নয় কেবলমাত্র একটি জিমেইল একাউন্ট লাগবে। কারণ ইউটিউব এখন জিমেইল অর্থাৎ গুগল এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সুতরাং জিমেইল ছাড়া অন্য কোন মেইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায় না। আপনার যদি জিমেইল একাউন্ট না থাকে তবে কিভাবে জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় সেটি জানতে আপনি আমার এই টিউটোরিয়ালটি দেখতে পারেন https://youtu.be/oOunmZ24b20
আর যদি আপনার ইতিমধ্যেই একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, তবে www.youtube.com এই ঠিকানায় গিয়ে সাইন ইন অপশনটিতে ক্লিক করুন এবং আপনার জিমেইল এর পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলেই আপনার ইউটিউব একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেল। আপনি এখন ইউটিউব এর একজন নরমাল ইউজার হিসেবে যেকোন ইউটিউব ভিডিওতে লাইক কমেন্টস করতে পারবেন। কিন্তু ইউটিউব এ একাউন্ট খোলা আর ইউটিউবে একটি চ্যানেল তৈরি করা কিন্তু এক জিনিস নয়। আপনার তৈরি করা ইউটিউব অ্যাকাউন্ট টি একটি চ্যানেলে রুপান্তর হতে পারে যদি আপনি তার একটি ব্র্যান্ড নেম দেন এবং সে অনুযায়ী আপনি আপনার চ্যানেলকে সাজিয়ে নেন তখনই তাকে চ্যানেল বলা যাবে। তো এবার মূল কথায় আসি। ইউটিউবে চ্যানেল তৈরি করতে হলে অবশ্যই আপনার ১৮+ বয়স হতে হবে। আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় তবে সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার বাবা অথবা আপনার বৈধ অভিভাবকের নাম এড্রেস দিয়ে জিমেইল খুলে তা দিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। এতে আপনার ইউটিউব এর অর্থ সহজেই পেতে সুবিধা হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি যেভাবেই ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন না কেন আপনার জিমেইল এড্রেস এবং নাম জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী অথবা যে কোন সনদ অনুযায়ী হতে হবে যা আপনার প্রকৃত পরিচয় বহন করে।
প্রশ্ন: আমার হাতের অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্টফোনটি দিয়ে কি আমি ইউটিউবিং শুরু করতে পারব?
উত্তর: এই প্রশ্নের উত্তর হলো হ্যাঁ পারবেন। তবে শুরুটা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন দিয়ে করলেও আমার পরামর্শ হল আপনি প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের দিকেই ঝুঁকতে হবে। অনেক ইউটিউবার আছেন যাদের কে জিজ্ঞেস করলে তিনি হয়তো বলবেন তার জীবনের শুরুটা হয়েছিল স্মার্টফোনের মাধ্যমে। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে প্রফেশনালিটি বা পেশাদারিত্ব অর্জনের জন্য ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের চলে যেতে হয়েছে।
প্রশ্ন: ভিডিও এডিট এর জন্য আমি কোন সফটওয়্যার বা অ্যাপ ব্যবহার করব?
উত্তর: আপনি যদি একজন স্মার্ট ফোন ইউজার হয়ে থাকেন তবে আমি বলব আপনার জন্য কাইনমাস্টার/kinemaster app প্রয়োজন। আর আপনি যদি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ইউজ করে থাকেন তবে আমার পরামর্শ হবে আপনি Camtasia 2019 ব্যবহার করতে পারেন। কেননা একজন নতুন ইউটিউবার থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় প্রফেশনাল ইউটিউবার ভিডিও এডিটিং এর জন্য এ দুটো সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকেন।
প্রশ্ন: আমি ইউটিউবে চ্যানেল আগে খুলবো, না ভিডিও এডিটিং আগে শিখব?
উত্তর: আমার পরামর্শ হল আপনি প্রথমেই ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন এবং আপনার কাজের লক্ষ্য অনুযায়ী আপনার সুন্দর একটা চ্যানেল নাম দিন। এরপর আমার চ্যানেলে দেওয়া ইউটিউবিং সংক্রান্ত ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল গুলো দেখুন এবং নিজের চ্যানেলটিকে সাজিয়ে তুলুন। পাশাপাশি আপনাদের উৎসাহ পেলে ভিডিও এডিটিং এর শুরু থেকে শেষ আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড দিব। তবে প্রথমেই বলেছি সেজন্য আপনাদের অনুপ্রেরণা বা আপনাদের উৎসাহ তাই আমার পাথেয় হিসেবে গণ্য হবে।
প্রশ্ন: কিভাবে ইউটিউবে চ্যানেল তৈরি করতে হয় তা হাতে-কলমে শেখাবেন কি?
আমি একজন শিক্ষক, শেখানোতেই আমার আনন্দ এবং এটিই আমার পেশা। কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হয় হাতে কলমে শিখতে আমার এই টিউটোরিয়ালটি দেখুনঃ
ইনফোটেকলাইফ.কম এর তালিকা ভুক্ত একজন লেখক ও কলামিস্ট। তাঁর লেখা আপনাদের ভাল লাগলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্টস করে দয়া করে আমাদের উৎসাহিত করবেন। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখকের বিরুদ্ধে তাঁর লেখা নিয়ে আপনার কোন অভিযোগ থাকলে আপনি আমাদের অভিযোগ ডেস্ক-এ অভিযোগ করতে পারেন। ইনফোটেকলাইফ.কম কোন লেখকের বিতর্কিত লেখার দায়ভার বহন করেনা। তবে আপনার করা অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে উক্ত লেখককে অস্থায়ী কিংবা গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। ইনফোটেকলাইফ.কম এর সাথে যুক্ত থাকতে নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে Join,Like ও Follow করুন।
আমি মোঃ আজাদ মিয়া। পেশায় একজন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ও প্রশিক্ষক (ইংরেজী)। শিক্ষা বিষয়ক লেখালেখির পাশা-পাশি ফেসবুকে আমাদের একটি Group আছে যার নাম শিক্ষক কণ্ঠস্বর। যাতে আমি নিয়মিত শিক্ষা বিষয়ক পোস্টগুলো শেয়ার করে থাকি। ইনফোটেকলাইফ আপনাদের ব্লগ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
ফেসবুক । টুইটার । ইনস্টাগ্রাম। গুগল+ । ইউটিউব
C.E.O & Admin
আমি মোঃ গুলজার হুসাইন। পেশায় একজন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ও প্রশিক্ষক (ইংরেজী)। ব্লগিং ও ইউটিউবিং আমার নেশা ও পেশা। এই দু’টো ছাড়া একটি মুহুর্ত আমি কল্পনাও করতে পারিনা। ইনফোটেকলাইফ আপনাদের ব্লগ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
আমি মোঃ রিয়াজ হোসেন। পেশায় একজন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ও অনলাইন রাইটার(প্রযুক্তি)। ব্লগিং ও সোসাল মিডিয়া (ফেসবুক) এনালাইজ আমার নেশা ও পেশা। এই দু’টো ছাড়া একটি মুহুর্ত আমি কল্পনাও করতে পারিনা। ইনফোটেকলাইফ আপনাদের ব্লগ। আপনাদের ভালবাসাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
No comments:
Post a Comment