প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার মান ও পাঠদান নিশ্চিত করতে শিক্ষক ছাত্র অনুপাত ১:৩০ করার প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। তারা মনে করেন, এক শ্রেণীতে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলে পাঠদানে নানমূখী সমস্যা হয়। শিক্ষার্থীদের হাজিরা নিতেই সময় শেষ হয়। এছাড়া একজন শিক্ষকের পক্ষে সব শিক্ষার্থীদের মনযোগ আকৃষ্ট করতে পারেন না। শিক্ষকরা স্কুলে শিক্ষাদান ছাড়াও সরকারের নানা ধরণের কাজ করে থাকেন।
সম্প্রতি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রাখমিক শিক্ষাকর ৩৪টি সমস্যা তুলে ধরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করে। এই সুপারিশের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীর কমানোর কথা তুলে ধরা হয়।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোথাও শিক্ষক ছাত্রের অনুপাত ১:৫, ১:৭, ১:১৫ । কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় এ হার অনেক বেশি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৬০১টি। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষক ৩ লাখ ২২ হাজার ৭৬৬ জন। আর শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ কোটি ১৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৩৮ জন। সে হিসাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অনুপাত ১:৬৭ ।
সম্প্রতি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে শিক্ষার মান নিশ্চিত করনে হার ১ :৩০ করা জরুরি বলে মনে করেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করার ফলে এ খাতে ঝরেপড়া রোধসহ অনেক ফলপ্রসূ পরিবর্তন এসেছে। সম্প্রতি প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। কিন্তু সে অনুপাতে শিক্ষকের জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এ সমস্যা রয়ে গেছে।
এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি, অষ্টম শ্রেণি চালুকৃত ও জাতীয়করণকৃত স্কুলে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। জাতীয়করণকৃত স্কুলের অবকাঠামো জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত নতুন ভবন ও শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের উচিত প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা এবং প্রাথমিক শিক্ষা দুটি পৃথক মন্ত্রণালয় হওয়ার কারণে সমস্যাটা হচ্ছে। তারা প্রাথমিক শিক্ষায় বৈষম্য কমানোর কথা বলেন।
একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষার ভিত যদি মজবুত না হয় তাহলে সে কীভাবে ভবিষ্যতে ভাল হবে প্রশ্ন তাদের। তাই প্রাথমিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব বাড়াতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা ও আর্থিক সুযোগ সুবিধা (বেতন-কাঠামো) বাড়ানোর মত দেন তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্কুল নির্মাণের একটি নীতিমালা আছে। সেখানে মাঠের উপস্থিতি, ক্লাসের আয়তন কত হবে তা পরিষ্কারভাবে লেখা আছে। কিন্তু আইন থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। এমন জায়গায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে শিশুরা নিরাপদে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে পারে। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের মনে রাখতে হবে, খেলাধুলা হলো শিক্ষার অংশ। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর মধ্যে নেতৃত্ববোধ জাগে।
ব্যনেবেইজের সর্বশেষ তথ্য
শিক্ষাবিদ ড. জসিম উদ্দিন মনে করেন, দেশের প্রাথমিক শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে শ্রেণীকক্ষের দিকে। শ্রেণীকক্ষ যেন শিক্ষার্থী বান্ধব হয়। এছাড়া শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত ঠিক রাখতে হবে। নইলে পাঠদান ভালো হবে না।
সূত্রঃ এডুকেশন বাংলা
No comments:
Post a Comment