সবাইকে স্বাগতম নিস আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর রিয়েল লাইফ প্রজেক্টে। আগের তিনটি পর্ব যারা এখনো পড়েননি তারা দেরি না করে এখানি পড়ে নিন আগের পর্ব গুলো, অন্যথায় ছন্দ পাবেন না।
ডোমেইন হল একটি ওয়েব সাইটের নাম/ওয়েব এড্রেস, যা দিয়ে মানুষ আপনার সাইটে আসবে বা আপনার সাইটকে খুজে বের করবে। উদাহরন- abc.com; বলে রাখা ভাল- অনেকেই ডোমেইন এবং হোস্টিং এক জিনিষ মনে করে। ডোমেইন শুধুই ওয়েব সাইটের নাম, আর হোস্টিং হল সেই ওয়েব সাইটের তথ্য রাখার স্থান।
ডোমেইন একটি ইউনিক বিষয়, একি নামে দুইজন বা তার বেশি মানুষ থাকতে পারে। কিন্তু একি নামের ডোমেইনে একাধিক ওয়েব সাইট থাকতে পারে না। তাই ভাল ডোমেইন খালি পাওয়া বেস কষ্ট সাধ্য, অনেক সময় চাহিদা অনুযায়ি ভাল ডোমেইন খালি পাওয়া যায় না।
পৃথিবীতে অনেক রকমের ডোমেইন (
ডোমেইন এক্সটেনশান) পাওয়া যায়। ডোমেইনকে তার এক্সটেনশান (.com; .net; .org; .gov; .edu etc.) দিয়ে ঐ ডোমেইনের আওতায় যে সাইট আছে তার প্রকৃতি বুঝা যায়। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ডোমেইনের এক্সটেনশান তৈরী হচ্ছে। এক এক এক্সটেনশনের ডমিনের দাম এক এক রকম। আমরা সাধারনত ডট কম (.com) ডোমেইন নিয়ে কাজ করে থাকি। ক্ষেত্র বিশেষে ডট নেট (.net) ও ডট ওআরজি (.org) নিয়েও কাজ করি।
আমাদের অ্যাফিলিয়েশনের জন্য আমরা মূলত .com, .net বা .org এই ৩টি এক্সটেনশানের যেকোন একটি এক্সটেনশানের ডোমেইন নিয়ে কাজ করব। আর এই ৩টি এক্সটেনশানের ডোমেইনের দাম সাধারনত ১০ থেকে ১৫ ডলারের হয়ে থাকে (৮০০ থেকে ১২০০ টাকা)।
বলে রাখা ভাল, ডোমেইন এবং হোস্টিং সাধারনত ১ বছরের জন্য নেওয়া হয়। বছর শেষে পুনরায় আপনাকে সেই ডোমেইন এবং হোস্টিং রিনিউ করতে হবে।
ডোমেইন নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়:
১। সহজেই মনেরাখা/লিখা যায় এমন: ডোমেইন নির্বাচনে এমন ডোমেইন বাছাই করা উচিৎ যা কিনা একবার দেখলেই মনে রাখা যায়। ডোমেইনে বিদঘুটে এমন কিছু দেওয়া যাবে না যা কিনা উচ্চারন করতে মানুষের দাঁত ভেঙ্গে ফেলার উপক্রম হয়। সহজ-সরল নাম নেওয়াটাই শ্রেয়।
২। অবাঞ্চিত কেরেক্টার না ব্যাবহার করা: ডোমেইনে এমন কোন ক্যারেক্টার দেওয়া উচিৎ না, যাকিনা ব্রাউজারে ডোমেইন টাইপ করার সময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। উদাহরন: আপনি যদি কাউকে বলেন প্রথমআলো ডটকমে ভিজিট করতে, সে যদি প্রথমআলো ডটকম সম্পর্কে পূর্র্বে কোন ধারনা না রাখে, তাহলে সে অবশ্যই ব্রাউজারে prothomalo.com টাইপ করবে। আর সে চলে যাবে অন্য কোন আন-অথরাইজড ওয়েব সাইটে। কারন আপনি/আমি যখন তাকে বলেছি তখন তাকে “প্রথম ড্যাস(-) আলো” বলেন নি, আর তাই সে ভুল ওয়েব সাইটে চলে গেছে। সুতরাং ডোমেইনে অপ্রয়োজনীয় (-), সংখ্যা (24 বা 360) না ব্যবহার করাই ভাল।
৩। ভুল বানান পরিহার করা: অনেকেই ডোমেইনের বানানে ইচ্ছে করে বা অনিচ্ছাকৃত ভুল করে। যার দরুন সেই ডোমেইনের ব্রেন্ড ভ্যালু সঠিক বানানের ডোমেইনে অটমেটিক চলে যায়। উদাহরন: cellbazaar.com এখানে cell বানান ভুল থাকায় sellbazaar.com এ চলে যাচ্ছে। কারন কেউ সেলবাজারকে পরিচয় করিয়ে দিলে সে বলে দিবে না যে সেল বানানটা সি(C) দিয়ে। সুতরাং ডমিনে বানানের প্রতি নজর দিন।
৪। বেশি শব্দ পরিহার করা: ডোমেইনে যত কম শব্দ ব্যবহার করা যায় ততই ভাল। বেশি বর্ণ বা শব্দ না ব্যবহার করাই উত্তম। অল্প বর্ন বা শব্দ যা কিনা বলতে ও শুনতে শ্রুতি মধুর হয় সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। বড় শব্দের ডোমেইন মানুষের পক্ষে মনে রাখাটা কষ্টকর। তাই শ্রুতি মধুর ছোট নাম দেওয়াটাই উত্তম।
৫। সম্ভব হলে ডট কম (.com) ডোমেইন নেওয়া: যেকোন সাইট বানানোর ক্ষেত্রে বিশেষ করে ব্লগিং ও অ্যাফিলিয়েশান ক্ষেত্রে ডট কম (.com) ডোমেইনের প্রধান্য দেওয়া উচিৎ। প্রয়োজনে ডোমেইনের নামে কিছু পরিবর্তন করে হলেও নেওয়া উচিৎ। পরিবর্তনটা এক এক নামের ক্ষেত্রে এক এক রকম হতে পারে।
৬। রিদমিক ডোমেইন চয়েজ করা: যেহেতু ভাল ও প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ ডমিন বিক্রি হয়ে গেছে, তাই আপনার ডোমেইন চয়েজ করার ক্ষেত্রে রিদমিক ব্যাপারটা মাথায় রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে দুইটি বা তিনটি শব্দ মিলিয়ে রাখতে পারেন। কিছু রিদমিক ডমিনের উধাহরন: lalgolap.com (lal এবং golap), currentworld.com (current এবং world), smartpassiveincome.com (smart, passive এবং income), earntricks.com (earn এবং tricks, devsteam.com (devs এবং team) bigganprojukti.com (biggan এবং projukti) ইত্যাদি
কোথা থেকে ডোমেইন কিনবেন?
যদি আপনার
পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড, পেপাল কিংবা অন্য কোন পেমেন্ট গেট-ওয়েতে একাউন্ট থাকে তাহলে আমি বলব আপনি ইন্টারনেশনাল কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনুন। নিচে কিছু জনপ্রিয় কোম্পানির নাম দেওয়া হল যারা কিনা অল্প দামে ডোমেইন প্রভাইট করে। এদের কাছ থেকে ডোমেইন কিনতে পারবেন দাম ১০ থেকে ১২ ডলারের ভিতর।
ইন্টারনেশনাল কোম্পানি:
যারা এখনো
মাস্টার কার্ড নেন নি বা পান নাই, তারা দেশিয় অনেক কোম্পানি আছে যাদের কাছে বাংলা টাকার বিনিময়ে ডোমেইন কিনতে পারবেন। এদের কাছ থেকে ডোমেইন কিনতে আপনার খরচ হবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
দেশীয় কোম্পানি:
ডোমেইন কেনার পূর্বে লক্ষনীয় বিষয় সমূহ:
যেহেতু প্রতিটি ডোমেইন এক বছর অন্তর অন্তর রিনিউ করতে হয়। কেউ যদি রিনিউ না করে তখন নিদৃষ্ট সময় পর ডোমেইনটি অবার বেচার উপযুক্ত হয়ে যায়। তাই ডোমেইন কেনার পূর্বে একটু চেক করে নিন যে ডোমেইন টি আগে কেউ ব্যবহার করেছে কিনা? আর ব্যবহার করলেও সেকি ডোমেইনটিতে কোন স্প্যামিং করেছে কিনা। এখানে স্প্যামিং বলতে বুঝানো হচ্ছে, ডোমেইনটি কোন মিস ইউজ করা। যেমন: আগের ব্যবহারকারি সেখানে কোন হ্যেকিং, ক্রেকিং, এডাল্ট, ড্রাগ, বা অস্র। এক কথায় সাইটে অবৈধ কোন কনটেন্ট রেখেছিল কিনা সেটা চেক করা জরুরি। কারন যদি কোন সাইটে স্প্যামিং হয়ে থাকে সেই সাইট সাধারনত google থেকে সেই ডোমেইনটি penalised করা হয়ে থাকে। আর যদি কোন ডোমেইন Google Penalised করে সেটা রিকোভার করা অনেক কঠিন কাজ। তাই ডোমেইন কেনার আগে চেক করে দেখে নিন সেটি penalised কিনা। যদি ডোমেইনের পূর্বের ভার্সনে স্প্যামিং/অবৈধ কিছু পান তাহলে সেই ডোমেইন পাল্টে নতুন ডোমেইন কিনুন।
পুরাতন ডোমেইন চেক করার নিয়ম: প্রধমেই গুগলে সার্চ করুন “site:domain.com” দেখুন কোন রেজাল্ট দেখায় কিনা। যদি ডোমেইনটির পূর্বের ভার্সন গুগলে ইনডেক্স থাকে তাহলে সার্চ বারের নিচেই দেখাবে কয়টা রেজাল্ট আছে সাইটের। যদি রেজাল্ট বারে শূণ্য(০) থাকে তাহলে বুঝবেন ডোমেইনটির কোন তথ্য গুগলে নেই। তাহলে সেটিকে মুটামুটি সেফ বলা যায়। আর যদি দেখেন রেজাল্ট অনেক গুলো দেখাচ্ছে তাহলে বুঝবেন যে ডোমেইনটি আগে কেউ ব্যবহার করেছিল। যদি বুঝেন ডোমেইনটি পূর্বে ব্যবহৃত তাহলে দেখে নিন আগে মালিক কি কাজে ডোমেইনটি ব্যবহার করেছে। যদি ডোমেইনের পূর্বের ভার্সনে স্প্যামিং/অবৈধ কিছু পান তাহলে সেই ডোমেইন পাল্টে নতুন ডোমেইন কিনুন।
স্প্যামি ডোমেইন চেক করার নিয়ম:
এই পদ্ধতিতে জানবো আগের ডোমেইনে কি কনটেন্ট পাবলিস্ট করা হয়েছিল। এজন্য আমাদের যেতে হবে
archive.org সাইটে। যেখানে আপনি আপনার ডোমেইন দিয়ে BROWSE HISTORY বাটনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করলেই দেখতে পাবেন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত একটা টাইম কেলেন্ডার।

যদি ডোমেইনটি আগে ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাহলে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের ভিতর কোন না কোন সালের অংশে কালো দাগ দেখাবে। যদি কালো দাগ না থাকে তাহলে নিশ্চিত হবেন ডোমেইনটি একদম ফ্রেস। আর যদি কালো দাগ দেখতে পান তাহলে সেই দাগে ক্লিক করুন।
ক্লিক করার পর নিচে দেখবেন একটা মাসিক ভিক্তিক কেলেন্ডার চলে এসেছে। সেখানে কিছু মাসের কিছু কিছু তারিখ হালকা নিল রং এর হয়ে আছে। সেই তারিখ গুলোতে ক্লিক করলেই দেখতে পারবেন ঐ বছরের ঐ তারিখে সাইটটি দেখতে কেমন ছিল। সেখানে কি কি কনটেন্ট ছিল। আর সেই কনটেন্ট গুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন ডোমেইনটির পূর্বের ভার্সন কি ভাল ছিল না খারাপ ছিল।
ভাল ডোমেইন খুঁজার কিছু টিপ্স:
এখানে আমি আপনাদের দুইটি সাইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব, যা কিনা আপনাকে ভাল ডোমেইন খুঁজতে সাহায্য করবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক-
- impossibility.org: এই সাইটটির মাধ্যমে আপনি আপনার মেইন কিওয়ার্ডের সাথে যদিন কোন adjectives, verbs, nouns কিংবা সংখ্যা যুক্ত করে ডোমেইন খুঁজতে চান তাহলে এটি আপনাকে অনেক সহজেই সেই কাজটি করে দিবে।
- domaintools.com/buy/domain-suggestions: এই সাইটিতে আপনি আপনার মেইন কিওয়ার্ড বা নিস দিয়ে সাজেশান চাইলে অনেক ভাল ভাল নাম সাজেস্ট করে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এই সাইটটি অনেক বেশি ব্যবহার করেছি।
1 comment:
আপনার ব্লগের সব পোষ্টই তো দেখি কপি পেস্ট
Post a Comment