গুজব তথা মিথ্যা চেনার কতগুলো কিলার টিপস যা আপনাদের কাজে আসবেই! - ICT-তে জীবন গড়ি

Infotech Ad Top new

Infotech ad post page Top

গুজব তথা মিথ্যা চেনার কতগুলো কিলার টিপস যা আপনাদের কাজে আসবেই!

গুজব তথা মিথ্যা চেনার কতগুলো কিলার টিপস যা আপনাদের কাজে আসবেই!

Share This

 মানব ইতিহাসে ভাষার বিকাশ ও ভাবের আদান-প্রদান ঠিক কখন থেকে শুরু হয়েছিল সেটা জানা না গেলেও তখন যে তথ্যের সীমাবদ্ধতা ও তার প্রচার মাধ্যমগুলো ছিল সীমিত ও অপ্রতুল তা এক বাক্যে স্বীকার করে নিতে হয়। কিন্তু কালের পরিক্রমায় বর্তমানে মানুষ এখন তার উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে। মানুষ তার অভিযোজন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে তার মনের সুক্ষাতিসূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো যেমন শব্দমালায় সাজিয়ে প্রকাশে সক্ষম। তেমনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার জন্য মানুষ তার অর্জিত জ্ঞান অভিজ্ঞতা অনুভূতি অনায়াসেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির এই খোলামেলা যুগে আমরা প্রতিনিয়ত তথ্যের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। তথ্যের এই অবাধ প্রবাহ হতে একজন মানুষ যেমন নিজেকে সমৃদ্ধ করে পৌঁছে যেতে পারে জ্ঞানের উচ্চশিখরে তেমনি এখানে এমন অনেক তথ্য রয়েছে যার একটা বিশেষ অংশই গুজব ও মিথ্যাকে নিয়েই আবর্তিত। আর এসব গুজব ও মিথ্যা তথ্য আমাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে কখনো কখনো সমাজে বড় অনিষ্ট হয়ে যায় । ব্যক্তি তথা সমাজ জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। গুজব ও মিথ্যা দু' ধরনের হতে পারে- যেমন ধরুন-


🙏 গল্প বা তথ্য যা সত্য নয়(পুরোপুরি মিথ্যা) :- কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এমন কিছু গল্প বা তথ্য প্রচার করা হয় যার পুরোটাই মিথ্যা। যেমন ইরাকের সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য পশ্চিমা বিশ্ব ও তাদের লালিত গণমাধ্যমগুলো দ্বারা গণবিধ্বংসী অস্ত্র (weapons of mass destruction) মজুদ এর যে তথ্য প্রচার করা হয়েছিল সেটা পরবর্তীতে পুরোটাই মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কিন্তু ততদিনে স্বার্থান্বেষী মহল যা চেয়েছিল ছিল তারা  তা চরিতার্থ করতে সক্ষম হয়েছিল।

🙏 গল্প বা তথ্য যাতে আংশিক সত্য থাকলেও ১০০ ভাগ সঠিক নয় (আংশিক সত্য) :- উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে একজন সাংবাদিক বা জার্নালিস্ট কোন একজন রাজনীতিবিদের বক্তৃতার একটি খন্ডিত অংশ উদ্ধৃত করলেন তিনি যা বলতে চেয়েছেন তার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে। এটা হতে পারে সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে, বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অথবা হতে পারে এটি নিছক ভুল। 


🙏 গুজব ও মিথ্যা তথ্য কিভাবে ছড়ায়?

গুজব ও মিথ্যা তথ্য বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া এবং টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে কিছুটা ছড়ালেও তা ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে না কারণ এর পেছনে কোনো না কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি রয়েছেন যাদেরকে এর জন্য দায়-বদ্ধ থাকতে হয়। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল যুগে অনলাইনের মাধ্যমেই গুজব ও মিথ্যা তথ্য বেশি ছড়িয়ে থাকে। কারণ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটার তার ব্যবহারকারীকে যেকোনো তথ্য শেয়ার করার একটি অপশন বা সুযোগ দেয় যার ফলে এটা অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু এ সকল তথ্যের উৎস বিচার করা হয় না বা যাচাই করাও সম্ভব হয় না। তাই বলা যায় বর্তমান সময়ে মিথ্যা ও  গুজব ছড়ানোর অন্যতম প্রধান একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন জগত। 


🌹 মন্তব্য সমুহ (Comments) পর্যবেক্ষণ:- সামাজিক মাধ্যমে গুজব বা মিথ্যা চেনার অন্যতম একটি উপায় হলো আপনি যে তথ্যটি দেখছেন সেটি সম্পর্কে অন্যেরা কী ভাবছেন তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যা আপনাকে উক্ত তথ্যনির্ভর যোগ্যতা সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।


🌹 লাইক(Like)/ডিজলাইক(Dislike): কোন তথ্য নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে আসার আগে ওই তথ্যটি তে কতজন লাইক এবং লাইক দিয়েছে সেটাও সত্য- মিথ্যা যাচাইয়ের একটি মাপকাঠি হতে পারে।


🌹 উৎস যাচাই: তথ্য সত্য না মিথ্যা তা যাচাইয়ের আর একটি মাপকাঠি হতে পারে তথ্যটি আপনি কোন উৎস থেকে পেলেন তার উপর। আপনি এমন কোন উৎস থেকে তথ্য পেলেন যার নাম আপনি পূর্বে কখনো শুনেনি। তাহলে এ বিষয়ে আপনার যথেষ্ট সাবধানী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যে পেইজ থেকে আপনি তথ্যটি পড়ছেন সেই পেজের ওয়েব এড্রেস টি বারবার চেক করুন। যেমন ওয়েব এড্রেস এর বানানটা ঠিক মত আছে কিনা, শুনতে অদ্ভুত লাগে এমন কিছু ডোমেইন এক্সটেনশন যেমন   .infonet  .offer ইত্যাদি হতে প্রাপ্ত তথ্য অধিক সন্দেহজনক। এক্ষেত্রে .com .UK .net হতে প্রাপ্ত তথ্য অধিক বিশ্বস্ততার দাবি রাখে।

🌹 বাহ্যিক মূল্যায়ন: গুজব বা মিথ্যা তথ্য সম্বলিত ওয়েবসাইটগুলোতে অপেশাদারী মনোভাব, বিরক্তিকর এড বা বিজ্ঞাপনের বাহুল্য ও চুরি করা বা এডিট করা ইমেজ (Image) ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা আপনাকে গুজব বা মিথ্যা তথ্য শনাক্তকরণের সাহায্য করবে। 


🌹 ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ/আমাদের প্রসঙ্গে/About us /About/Email Contacts/ Policy Statements সংক্রান্ত সেকশন পেজ রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন। এ সকল পেজ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট গুলি অধিক নির্ভরযোগ্য হয়ে থাকে।


🌹 তথ্যের লেখক ও প্রকাশক সনাক্তকরণ: গুজব বা মিথ্যা তথ্য সম্পর্কিত লেখায় কোন লেখক এর নাম উল্লেখ থাকে না বা থাকলেও সেখানে ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদি কোন লেখক এর নাম উল্লেখ থাকে তবে উক্ত লেখক কতোটুকু বিশ্বাসযোগ্য সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে উক্ত লেখক এর নাম লিখে অনলাইনে সার্চ করুন। দেখুন তিনি কতটুকু বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য।


🌹 তথ্যের মূল বক্তব্য অনুধাবন: যে তথ্যটি আপনি পেলেন সেই তথ্যটি ভালো করে পড়ুন। তথ্যটি আপনাকে কোন মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করছে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। উক্ত লেখনীর মধ্যে দিয়ে আপনি সমাজের চোখে যা দৃষ্টিকটু সে দিকে ধাবিত হচ্ছেন কি?


🌹 তথ্যের একাধিক সূত্র যাচাই: কোন একটি তথ্য সম্পর্কে একাধিক সূত্র কি বলছে বা আদৌ কোন কিছু বলছে কিনা সেটাও গুজব বা মিথ্যা যাচাইয়ের একটি হাতিয়ার হতে পারে। প্রাপ্ত তথ্যটি সম্পর্কে অন্যান্য সূত্র যেমন রয়টার্স, সিএনএন কিংবা বিবিসির সূত্র গুলো কি বলছে সেটা জানা জরুরী কারণ এসকল সূত্র অধিক নির্ভরযোগ্য। তবে কেহই পক্ষপাতহীন নয় এবং ভুল যে কারো দ্বারাই সম্ভব। সুতরাং অনুসন্ধানী দৃষ্টি সর্বদাই থাকা দরকার।


🌹 সাক্ষ্যপ্রমাণ যাচাই করণ: একটি তথ্যকে বিশ্বাসযোগ্যতা দেওয়ার জন্য তার রেফারেন্স হিসাবে অনেক সূত্র, অনেক বিশেষজ্ঞের উদ্ধৃতি, পরিসংখ্যান এর সাহায্য নেওয়া হয়। সুতরাং তথ্যের সত্য- মিথ্যা যাচায়ে এসকল সাক্ষ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখা তন্তু জরুরি।


🌹 কোন ছবি বা ভিডিও কেই তথ্যের একমাত্র উৎস হিসেবে না নেওয়া: কোন ছবি বা ভিডিও কে নির্ভরযোগ্য বা সত্য হিসাবে মেনে নেওয়ার পুর্বে সেটি আসলে কতটুকু সঠিক তা যাচাই করা প্রয়োজন। ছবি বা ভিডিও দুটোই এডিট করে অনলাইনে চালিয়ে দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনি গুগোল রিভার্স ইমেজ সার্চ নামের টুলটিকে ব্যবহার করতে পারেন এবং পরীক্ষা করে দেখতে পারেন ছবিটির মূল উৎস কোথায় এবং ছবিটিতে কোন পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা।


🌹 সচেতন দৃষ্টি ভঙ্গি: সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি বা উপস্থিত বুদ্ধি পারে মিথ্যা ও গুজব থেকে দূরে রাখতে। হঠাৎ করেই কোন তথ্যের উপর আস্থা না রেখেই তথ্যটি সম্পর্কে আপনার অনুসন্ধানী দৃষ্টি জারি রাখুন।


🌹 Fact Checker টুলস এর ব্যবহার: মিথ্যা বা গুজব শনাক্তকরণে সর্বোপরি factcheck.org, Snopes.com, politifact.com ইত্যাদি অনলাইন টুলস ব্যবহার করে দেখুন।

No comments:

Post a Comment

Infotech Post Bottom Ad New

Pages