জিকা ভাইরাস পৃথিবীর জন্য এক মহা সতর্ক সংকেত! আসুন জানি এর সম্পর্কে, না পড়লেই মিস করবেন! ! ! - ICT-তে জীবন গড়ি

Infotech Ad Top new

Infotech ad post page Top

জিকা ভাইরাস পৃথিবীর জন্য এক মহা সতর্ক সংকেত! আসুন জানি এর সম্পর্কে, না পড়লেই মিস করবেন! ! !

জিকা ভাইরাস পৃথিবীর জন্য এক মহা সতর্ক সংকেত! আসুন জানি এর সম্পর্কে, না পড়লেই মিস করবেন! ! !

Share This

জিকা ভাইরাস কি?

জিকা(Zika)ভাইরাস হচ্ছে ফ্রাভিভাইরিডে(Flaviviridae) ভাইরাস পরিবার এবং ফ্লাভিভাইরাস(Flavivirus) গোত্রের সদস্য।এই ভাইরাসটি দিনের বেলায় ইজিপটি(aegypti) নামের এডিস(Aedes ) প্রজাতির মশার কামড় হতে ছড়ায়। এই এডিস মশাটি শরীরে সাদা ফোটা পায়ে সাদা ফোটা রয়েছে। এরা রাত অপেক্ষা দিনেই বেশি বিচরন করে এবং প্রানীকুলকে কামড় দেয়।  




জিকা ভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়?

বিশ্বে জুড়ে আলোচিত এই সংক্রামক ভাইরাসটি সর্ব প্রথম কোথা হতে উৎপত্তি তা জানা না গেলেও এটি সর্ব প্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় একটি বানরের শরীরের সনাক্ত করা হয়। এবং এরই রেশ কাটতে না কাটতেই ১৯৫২ সালে এটি মানব দেহে সংক্রমনের খবর পাওয়া যায়। তখন থেকেই এই ভাইরাসটি কযেক দশকে আফ্রিকা ও নিরক্ষীয় এশিয়ার দেশগুলোতে মাঝারিমানের রোগের সংক্রমণের জন্য দায়ী ছিল।‘জিকা’ ভাইরাসের নামকরণ হয়েছে উগান্ডার জিকা বনের নামানুসারে। ১৯৪৭ সালে হলুদ জ্বর নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা জিকা বনে একটি বানরকে খাঁচায় পুড়ে রাখেন। পরে বানরটি জ্বরে পড়লে তার দেহে একটি সংক্রামক ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ১৯৫২ সালে এর নাম দেয়া হয় জিকা ভাইরাস। সর্বপ্রথম ১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়ায় এক ব্যক্তির দেহে এই ভাইরাস পাওয়া যায়।

সম্প্রতি গত বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালের মে মাসে Pan American Health Organization (PAHO) ব্রাজিলে প্রথমবারের মত জিকা ভাইরাস সংক্রমনের ব্যাপারটি নিশ্চিত হয় এবং সতর্কতা জারি করে। সংক্রমনের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায় গর্ভবতী মহিলাদের উপর যারা এর ফলে  ত্রটিপুর্ন  নবজাতকের জন্ম দেয়।

কিভাবে সংক্রমিত হয় এবং এর লক্ষণ কি কি?


পুর্বেই বলেছি এই মারাত্বক সংক্রামক ভাইরাসটি ছড়ায় এডিস  গোত্রের ইজিপটি(aegypti)  নামের মশার কামড় হতে। এবং পৃথিবীর এমন কোন স্থান নেই যেখানে এই মশাটি খুজে পাওয়া যাবেনা। আর ভয়টা সেখানেই। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা() বলছে এই মারাত্বক সংক্রামক ভাইরাসটি তথা এই এডিস মশার প্রজাতির অগ্রযাত্রা রোধ করা না গেলে এই ভাইরাসের সংক্রমন মহমারী আকারের ছড়িয়ে পড়তে পারে। তারা আরও বলছেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিস্কার করা সম্ভব হবে না যদি না এখন থেকে এর জন্য প্রস্তুতি না নেওয়া হয়। তাই বিশ্বের বাঘা বাঘা চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা একে প্রতিরোধের কথা বলছেন। ব্রাজিলের একদল চিকিৎসা বিজ্ঞানী এই এডিস ইজিপটি() মশার বিস্তার রোধের সফলতার দাবী করেছেন। তারা এই ভাইরাস এর বাহক স্ত্রী মশার দেহ হতে জিন নিয়ে তা পুরুষ জাতীয় এডিস দেহে প্রয়োগ করে তা দিয়ে শতকরা ৮২ ভাগ লার্ভা ধ্বংস করা সম্ভব বলে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখেছেন।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হল, 

(১) ঘন ঘন জ্বর আসা
(২) চামড়া বা ত্বকে লাল দাগ ও চুলকানি
(৩) অস্থি সন্ধিতে ব্যাথা (যেমন হাত, হাটু, কোমর)
(৪) উপরোক্ত লক্ষনসমুহ ২ থেকে ৭ দিন পর্ষন্ত থাকতে পারে।


চিকিৎসা ও প্রতিরোধ


(১)এই রোগ হলে কেবল রক্ত পরিক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
(২) হাসপাতালে অবস্থান বা বিশেষ কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। 
(৩) আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারনতঃ বিশ্রাম ও চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করতে পারবেন।
(৪) প্রচুর পরিমানে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
(৫) প্রচলিত সাধারন ঔষধ দিয়েই জ্বরের চিকিৎসা করাতে হবে।
(৬) এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত মশারি মধ্যে বিশ্রাম নিতে যাতে করে আর একটি মশা ও তাকে কামড়াতে না পারে।



গর্ভবতী মহিলাদের উপর এর কোন প্রভাব রয়েছে কি?

হ্যাঁ সবচেয়ে খারাপ প্রভাব রয়েছে গর্ভবতী মহিলাদের উপর। এই ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলারা সাধারনত ত্রুটিপুর্ন নবজাতক জন্ম দিয়ে থাকেন। যার মাথা হয় শরীর হতে ছোট আকৃতির এবং যার ফলে ব্রেই ড্যামেজ এর সম্ভাবনা বিষয়টি চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা আশংকা প্রকাশ করছেন। তবে এনিয়ে বিস্তর গবেষনা চলছে। তারা বলছেন এই ভাইরাস সংক্রমন আর ত্রুটিপুর্ন বাচ্চা প্রসব এই দুটির মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। 



বিশ্ব জুড়ে কেন এত হৈ চৈ এই ভাইরাসটি কে নিয়ে?


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে এই ভাইরাসটি সংক্রমন বিশ্বজুড়ে এত আতঙ্ক আর সতর্কতার সৃষ্টি করেছে মুলত চারটি কারনে-
১) আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলাদের ত্রুটিপুর্ন সন্তান জন্মদান ও স্নায়ুবিক সমস্যা।
২) একটি বিশাল ভোগলিক এলাকা নিয়ে এর বিস্তার 
৩) পুর্বে যে ্সকল এলাকায় এই ভাইরাসটি ছিল সেদেশগুলোতে মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবে এর প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে, ফলে এটি এ সকল দেশ হতে সরে এস নতুন ঐ সকল দেশের দিকে নতুন শক্তি নিয়ে ধাবিত হচ্ছে যে সকল দেশের মানুষের শরীরের এর প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কম বা নেই বললেই চলে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন, আগামী একবছরে এই ভাইরাস টি পুরো আমেরিকা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে । অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এটি এখন আমেরিকা মহাদেশের গন্ডি পেরিয়ে ইউরোজ মহাদেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে। 
৪) এই ভাইরাসের এখন অবধি কোন প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়নি,  বিশেষ কোন চিকিৎসা পদ্ধতি ও দ্রুত শনাক্তের কোন উপায়ও এখন অবধি জানা নাই। 

আমাদের দেশে এই ভাইরাস প্রবেশের কোন সম্ভাবনা আছে কী?

আজ এ বিশ্বায়নের যুগে পৃথিবী একেবারে ছোট একটি ভিলেজের মত। এক প্রান্তের খবর যেমন পৃথিবীর আর এক প্রান্তে ছড়াতে সময় নেয় না, তেমনি যে ভাইরাসটি একটি মহাদেশে প্রায় সকল মানুষের দিকে থাবা তুলেছে, তা যে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে তার কথা তো চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা পুর্বেই জানিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি আক্রান্ত দেশগুলোর রাষ্ট্র প্রধানগন আগামী দু’ বছরের মধ্যে কোন নারীর সন্তান ধারনার বিষয়টি নাকচ  করে দিয়েছেন। কিন্তু যারা ইতোমধ্যে গর্ভবতী তারাই সব  থেকে বেশি ঝুকিতে রয়েছেন। এ হেন অবস্থান যে কোন মাধ্যমে সেটা পর্যটকদের মাধ্যমে হোউক আর পার্শবর্র্তী দেশ ভারত হতে হোউক আমাদের দেশে এর বিস্তার হতে পারে । তাই আতঙ্কিত না হয়ে  দেশের সরকার এবং জনগন  যৌথভাবে মোকাবেলা করতে হবে। সন্দেহ মনে হলে উপরের প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নিতে হবে। 




No comments:

Post a Comment

Infotech Post Bottom Ad New

Pages