
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মেছবাহ-উল-আলমের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর গতকাল সকালে সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া এবং চলমান কর্মবিরতি ও আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ঈদের পর আরো আলোচনা এবং মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ে বিষয়টি অবহিত করা হবে বলে জানা গেছে। এ দিকে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতারা ঈদের আগেই কোনো ঘোষণা বা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো বক্তব্য না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন। শিক্ষক নেতারা বলেছেন, সচিব ও মহাপরিচালকের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আমরা হতাশ। শিক্ষকদের কাস বর্জন এবং আসন্ন সমাপনী পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প রইল না বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
শিক্ষক নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা ও নির্দেশনার পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা এবং প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করা হয়নি।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক সমিতির আহ্বায়ক রিয়াজ পারভেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়ক মো: আতাউর রহমান এবং সহকারী শিক সমাজ সভাপতি ও সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের অন্যতম নেতা শাহীনুর আল আমিন গতকাল দুপুরে নয়া দিগন্তকে এসব কথা বলেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালেই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর মন্ত্রণালয়ের সচিব মেছবাহ-উল-আলমের সাথে সচিবালয়ে তার অফিসে সাক্ষাৎ করেন। ডিজি-ডিপিই সচিবকে প্রথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনরত সব পক্ষের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে অবহিত করেন। এ ছাড়া সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। সচিব বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ে আলোচনার কথা জানান বলে সূত্র উল্লেখ করে। শিক্ষকদের সব দাবির ব্যাপারে সচিব সহানুভূতিশীল বলেও জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
গত পরশু বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের সাথে আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর সব পক্ষের সাথে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষক নেতারা তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। ডিপিইর ডিজি শিক্ষকদের আন্দোলন ও কর্মবিরতি পালন থেকে সরে এসে নিয়মিত কাসে অংশ নেয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু সব কয়টি শিক্ষক সংগঠনের নেতারা ডিজির অনুরোধ শর্তসাপেক্ষে পালনের ব্যাপারে সম্মতি জানান। শিক্ষক নেতারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দাবিগুলোর ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা এলেই শুধু কর্মবিরতি ও কাসে ফিরে যাওয়া হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ঐক্যজোটের অন্যতম শরিক সংগঠন প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোা: শামসুদ্দিন গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, শিক্ষকদের দাবির ব্যাপারে ৫ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কোনো ঘোষণা না এলে ৬ অক্টোবর থেকে সব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন। এ ছাড়া ১৫ অক্টোবর শহীদ মিনারে সারা দেশের সহকারী শিক্ষকেরা অনশন করবেন। একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করবেন।
সহকারী শিক সমাজ সভাপতি ও সহকারী শিক্ষক ফেডারেশনের অন্যতম নেতা শাহীনুর আল আমিন নয়া দিগন্তকে বলেন, শিক্ষক সংগঠনগুলো একপ্লাট ফরমে এনে আন্দোলন জোরদারের কথা বিবেচনা করছি আমরা। তিনি বলেন, ‘মরি আর বাঁচি’ আন্দোলন চলবে। এখন ফেরার কোনো পথ নেই।
No comments:
Post a Comment